সংবাদ

দিয়েগো ম্যারাডোনা মারা গেলেন 60 বছর বয়সে

ফুটবলের রাজপুত্র খ্যাত দিয়াগো ম্যারাডোনা 60 বছর বয়সে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আর্জেন্টিনা তো বটেই পুরো পৃথিবীতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গণ্য এই কিংবদন্তি মারা গেলেন 60 বছর বয়সে। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ায় অস্ত্রোপচারের পর গত ১১ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। তবে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি মেলেনি। মদ্যপান সংক্রান্ত সমস্যার কারণে সরাসরি তাঁকে বুয়েনস আয়ার্সের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময় গত সপ্তাহদুয়েক ধরে সেখানেই ছিলেন তিনি।

আর্জেন্তিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন মারাদোনা। খবর দেওয়া হয় হাসপাতালে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছেও যায়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফুটবলের রাজপুত্র। সে কথা নিশ্চিত করেছেন তাঁর এজেন্ট মাতিয়াস মোরলা।

একনজরে ম্যারাডোনার বর্ণময় জীবন

maradona
maradona

ম্যারাডোনা ৩০ অক্টোবর ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি একাধারে একজন আর্জেন্টিনার ফুটবলয়ার,  কোচ,  সেই সাথে একজন ম্যানেজার এবং প্রাক্তন খেলোয়াড় ছিলেন।অনেক বিশেষজ্ঞ ফুটবল সমালোচক, প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং ফুটবল সমর্থক তাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে গণ্য করেন । তিনি বিংশ শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় পেলের সাথে যৌথভাবে ছিলেন।

ম্যারাডোনা একমাত্র খেলোয়াড় যিনি দুইবার স্থানান্তর ফী ক্ষেত্রে বিশ্ব রেকর্ড করেছিলেন। তিনি আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে 91 খেলায় 34 গোল করেন।তিনি চারটি ফিফা বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।  যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপ।সেখানে তিনি আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন এবং দলকে বিশ্বকাপ জয়ের নেতৃত্ব দেন। সেবার তিনি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন।প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড দুই গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। সেই দুটি গোল আসে ম্যারাডোনার পা থেকে। পা থেকে বললে ভুল হবে আসলে একটি গোল নিয়ে খুবই বিতর্ক আছে। যার মধ্যে একটি গোল হ্যান্ডবল ছিল। সেই হ্যান্ডবলের কারণে ম্যারাডোনার নাম হয় হ্যান্ড অফ গড’। এবং দ্বিতীয় গোলটি সর্বকালের সেরা গোল প্রায় 60 মিটার দূর থেকে পাঁচজন খেলয়াড় কে পাশ কাটিয়ে তিনি গোলটি করেন।

 

এছাড়া আর একটা দিক ম্যারাডোনাকে খুব বিখ্যাত করেছে। সেটা হলো তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ার পুরোটাই ছিল বিতর্কে ভরা। তিনি কোকেন সেবনের দায়ে 15 মাস নিষিদ্ধ হয়েছিল। অবশেষে তিনি 2005 সালে কোকেন নেশা ত্যাগ করেন।

এতকিছুর পরও ম্যারাডোনা ছিলেন সর্বকালের একজন শ্রেষ্ঠ খেলোয়ার। ম্যারাডোনা সারাজীবন নিজের দল এবং ফুটবলকে ভালোবেসে গেছেন। আর্জেন্টিনার খেলা দেখে কতবার তিনি হার্ট অ্যাটাকে ভুগেছিলেন সে আমরা সবাই জানি। এই কিংবদন্তি গত 25 শে নভেম্বর 2020 সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সেইসাথে বিশ্ব হারালো ফুটবলের রাজপুত্র কে। এরকম খেলোয়াড় শত বছর এই একবার পৃথিবীতে আসে।

কিংবদন্তীর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকপ্রকাশ করেছেন জাতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ক্লদিও তাপিয়া। তিনি বলেন, ‘দিয়োগো আর্মান্দো মারাদোনা… আপনি সর্বদা আমাদের হৃদয়ে থাকবেন।’

Md Jahidul Islam

আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ হতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে 2018 সাল থেকে সমাজের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অবলোকন করে- জীবনকে পরিপূর্ণ আঙ্গিকে নতুন করে সাজানোর আশাবাদী। নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরস্থায়ী- তাই নবরুপ ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখি করি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button