বিজয় দিবস বাংলাদেশ একটি গৌরবময় দিন । দিনটি বাংলাদেশের সর্বত্র যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসের দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ।হাজার ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই দিনটিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী প্রায় ৯১ হাজার সদস্য নিয়ে বাংলাদেশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এবং সেই দিন থেকে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি মানচিত্র গড়ে ওঠে। বাংলাদেশ হয়ে ওঠে স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র হিসেবে।ভারতে দিন বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।এ উপলক্ষে প্রতিবছর বাংলাদেশে দিবসটি যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে পালিত হয়। ১৬ ডিসেম্বর ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা ঘটে।ঢাকার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে থাকেন। এরপর দেশের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।
বিজয় দিবস ২০২০
এবছর বাংলাদেশ ৪৯ তম বিজয় দিবস পালিত হবে।দিনটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন রকম আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হবে। এই দিনটিতে বাংলাদেশের জনগণ একে অপরকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানায়। দিনটির আনন্দ সকল স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন রকম কর্মসূচি হাতে নেয়।মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গান ও ছোট নাটিকার আয়োজন করে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রকম কর্মসূচি হাতে নেয়।সেদিন সারাদিন টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র মুক্তিযুদ্ধের গান মুক্তিযুদ্ধের ছোট নাটিকা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট এর বিভিন্ন আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিজয় দিবস ২০২০ এর কর্মসূচি
বিজয় দিবস 2020 উপলক্ষে দেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন রকম কর্মসূচি হাতে নেয়।বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে প্রতিটি এলাকায় বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রকম ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলগুলোতে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধের গান প্রতিযোগিতা, নিত্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও দেশের প্রতিটি এতিমখানায়, কারাগারে ভালো খাবার সরবরাহ করা হয়ে থাকে।দিনটি সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে ।
আত্মসমর্পণের দলিল
পূর্ব রণাঙ্গনে ভারতীয় ও বাংলাদেশি যৌথ বাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে পাকিস্তান পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ড বাংলাদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানের সব সশস্ত্র বাহিনী আত্মসমর্পণে সম্মত হলো। পাকিস্তানের স্থল, বিমান ও নৌবাহিনীসহ সব আধা-সামরিক ও বেসামরিক সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেত্রে এই আত্মসমর্পণ প্রযোজ্য হবে। এই বাহিনীগুলো যে যেখানে আছে, সেখান থেকে সবচেয়ে নিকটস্থ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কর্তৃত্বাধীন নিয়মিত সেনাদের কাছে অস্ত্রসমর্পণ ও আত্মসমর্পণ করবে।
এই দলিল স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ড লেফটেন্যান্ট জেনারেল অরোরার নির্দেশের অধীন হবে। নির্দেশ না মানলে তা আত্মসমর্পণের শর্তের লঙ্ঘন বলে গণ্য হবে এবং যুদ্ধের স্বীকৃত আইন ও রীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আত্মসমর্পণের শর্তাবলির অর্থ অথবা ব্যাখ্যা নিয়ে কোনো সংশয় দেখা দিলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা আত্মসমর্পণকারী সেনাদের জেনেভা কনভেনশনের বিধি অনুযায়ী প্রাপ্য মর্যাদা ও সম্মান দেওয়ার পবিত্র প্রত্যয় ঘোষণা করছেন এবং আত্মসমর্পণকারী পাকিস্তানি সামরিক ও আধা-সামরিক ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও সুবিধার অঙ্গীকার করছেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার অধীন বাহিনীগুলোর মাধ্যমে বিদেশি নাগরিক, সংখ্যালঘু জাতিসত্তা ও জন্মসূত্রে পশ্চিম পাকিস্তানি ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেওয়া হবে।
স্বাক্ষর স্বাক্ষর
(জগজিৎ সিং অরোরা) আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি
লেফটেন্যান্ট জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল
জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জোন-বি
পূর্ব রণাঙ্গনে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ বাহিনী এবং অধিনায়ক পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড (পাকিস্তান)
১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১
আমি আমার পরবর্তী পোস্টে বিজয় দিবসের কর্মসূচি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত আলোচনা।
আপনি বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা বার্তা ফটো প্রতিপাদ্য বিষয় সহ যাবতীয় বিষয়াদি জানতে পারবেন আমার পরবর্তী পোস্টে। তো আপনাকে সেই পোস্ট ভিজিট করার আমন্ত্রণ রইল।