স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য । স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় জেনে নিন

হাতে ঘড়ি পড়ে এবং চোখে লম্বা একটা সানগ্লাস পড়ে স্মার্ট হওয়া যায়না । স্মার্ট হতে হলে কতগুলো গুণগত বৈশিষ্ট্য প্রয়োজন । পৃথিবীর বিশ্বসেরা স্মার্ট মানুষদের অর্থাৎ সফল মানুষদের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, তাদের কথাবার্তা, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এবং উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা স্মার্টনেসের পরিচয় বহন করে। মানুষের কথা বলার ধরন অর্থাৎ আকর্ষণীয়ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা স্মার্টনেসের একটি দিক হতে পারে।
জীবনে স্মার্ট মানুষ হতে হলে প্রকৃত মানুষের কাজকর্ম, আচার-ব্যবহার, কথা বলার ধরন এবং বিচক্ষনতার দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। মূলত যারা স্টার তাদের সবকিছুই স্মার্টনেসের অন্তর্ভুক্ত। ভালো দামি গাড়ি, প্যান্ট, শার্ট, জুতা, মোজা, ঘড়ি এবং সানগ্লাস পড়ে স্মার্টনেসের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য বহন করলেও অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্য স্মার্টনেসের প্রকৃত অর্থ প্রকাশ করে।
যে কেউ নিজেকে স্মার্ট ভাবতে পারে। তবে স্মার্ট মানুষেরা যেকোনো কাজ ভিন্নভাবে সমাধান করার চেষ্টা করে যাতে সকলের নজর কাড়ে। পৃথিবীতে সবাই স্মার্ট হতে পারে না। স্মার্ট হওয়ার উপায় অনেকেই গুগোল খোঁজ করে থাকেন, নতুন মানুষ বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ জয়-পরাজয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্মার্টনেস অর্জন করতে হলে যেগুলো বিষয় জানা খুব জরুরী। সেই বিষয়গুলো সমন্বয়ে আমরা আজকে আলোচনা করতে চলেছি।
কাজেই, কোন লাইন স্কিপ না করে পুরো আর্টিকেলটি ভালো ভাবে পড়ুন এবং স্মার্টনেসের মাধ্যমে লাইফস্টাইল উপভোগ করুন।
সত্যি কথা বলতে স্মার্টনেসের কোন ওষুধ নেই। নিজেকে স্মার্ট রূপে প্রকাশ করার জন্য কতগুলো ধাপ- বুদ্ধিমত্তা এবং বিচক্ষণতার প্রয়োজন। সুতরাং, স্মার্টনেস হতে গেলে আমাদের উপস্থিত বুদ্ধি কিভাবে বাড়াতে হবে, কোন পরিবেশে কিভাবে সকলের সাথে আচরণ করতে হবে, সকলের সাথে কিভাবে মিশতে হবে, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ মেজারমেন্ট এর মধ্যে কিভাবে রাখতে হবে এবং সর্বোপরি মানুষের সাথে কথা বলার ধরন কিরূপ হওয়া বাঞ্ছনীয় সবার আগে সেগুলো জানতে হবে।
স্মার্ট কাকে বলে?
স্মার্ট ইংরেজি শব্দ যার অর্থ হচ্ছে- সুন্দর অবয়ব। চেহারা ভালো থাকলে স্মার্টনেসের কৌশল সহজে আয়ত্ত করা যায়। এখন প্রশ্ন হতে পারে যে, কুতসিত গ্রুপের মানুষেরা কি তাহলে স্মার্টনেসের সংজ্ঞায় অংশগ্রহণ করবে না। নিশ্চয়ই করবে- কারণ ভাগ্যের স্মার্টনেস বা সুন্দর অবয়ব ছাড়াও মানুষ তার বুদ্ধিমত্তা এবং সুচারুভাবে কর্মদক্ষতা প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে স্মার্ট নিজের পরিচয় দিতে পারে।
সহজ কথায় বলা যায় যে , যে ব্যক্তি সকল বিষয়কে সামঞ্জস্য করে বুদ্ধিমত্তার শহীদ তাৎক্ষণিকভাবে মিটিয়ে দিতে পারে সেই হচ্ছে স্মার্ট।
স্মার্ট মানুষদের বৈশিষ্ট্য
ক্ষণস্থায়ী এই পৃথিবীতে অন্যের মন জয় করতে পারা স্মার্টনেসের প্রধান বৈশিষ্ট্য। পৃথিবীর বিভিন্ন মানুষের লাইফ-স্টাইল পর্যবেক্ষণ করে যে বৈশিষ্ট্য গুলো পাওয়া যায় তা নিচে তুলে ধরলাম যেন অনুগ্রহপূর্বক হলেও আমাদের অন্তরে স্মার্টনেসের ভ্রুণ অঙ্কুরিত হয়।
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য গুলোর মধ্য থেকে নিজেকে প্রশ্ন করুন যে কোন বৈশিষ্ট্য আপনার মধ্যে মিসিং রয়েছে কিনা।
স্মার্ট হওয়ার উপায়
যে ব্যক্তি যত বেশি জ্ঞানী সে তত বেশি স্মার্ট। সুতরাং, স্মার্টনেস অর্জন করতে হলে প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানের ভান্ডার বাড়ানো উচিত। সেই জ্ঞান অর্জন করা উচিত যে জ্ঞান মানুষের উপকার করে।
নিছক কথাবার্তা বলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে কার্য সম্পাদন করা নিশ্চয়ই স্মার্ট মানুষের কাজ নয়। সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজের কাছে উত্তম।
স্মার্ট হওয়ার ক্ষেত্র তিনটি । যেমন-
- কথা-বার্তা
- বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এবং
- উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা
কথাবার্তায় স্মার্টনেস এর পরিচয়:
- কথা বলার সময় মুখে হাসি এবং চোখে চোখ রাখুন।
- সবসময় কথোপকথন সংক্ষিপ্ত করুন। কথোপকথন বৃদ্ধি করতে হলে, অবশ্যই তার ব্যস্ততা সম্পর্কে নিশ্চিত হন।
- নতুন মানুষের সাথে বিতর্কিত বিষয় নিয়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। কথোপকথনের বিষয় পরিবার, পেশা, পছন্দ-অপছন্দ আর তার ভবিষ্যৎ স্বপ্নের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখুন।
- উত্সাহদান এবং ভাল কাজের প্রশংসা করুন।
- ইতিবাচক চিন্তা করুন।
- অন্যের কথা আগে মনোযোগ দিয়ে শুনুন তারপর উত্তর দিন।
- প্রথম পরিচয়ে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজন হলে, আগে নিজের সম্পর্কে বলুন তারপর জিজ্ঞাসা করুন।
- সততা এবং ওয়াদা রক্ষা করুন।
- যেকোন বিষয় ইজি ভাবে রূপক ব্যবহার করে উপস্থাপন করুন।
প্রয়োজনে উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিন।
বডি ল্যাঙ্গুয়েজ:
বডি ল্যাংগুয়েজ এর মাধ্যমে স্মার্টনেসের পরিচয় দিন। যেমন- ধরুন, আপনি আপনার টিচারের সাথে কথা বলছেন এবং নাকে, মুখে হাত দিয়ে অহেতুক নড়াচড়া করছেন, তাহলে নিশ্চয়ই তা স্মার্ট নামক ডিকশনারির ভাষা হতে পারে না।
সুতরাং নিজেকে ভদ্রতার সহিত প্রেজেন্টেশন করুন এবং প্রয়োজনে দুই হাতের মাধ্যমে বিষয় ভিত্তিক আর্ট ফলো করতে পারেন।
উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা:
বন্ধুরা, আপনি যেহেতু স্মার্ট মানুষে পরিণত হতে যাচ্ছেন সেহেতু, আপনাকে নিশ্চয়ই উপস্থিত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। সেজন্য আপনি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ফলো করতে পারেন। এছাড়াও বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে-
- বই পড়ুন
- প্রার্থনা শক্তিকে বাড়িয়ে নিন
- গুগল অথবা ইউটিউবকে জিজ্ঞাসা করুন
- প্রতিদিন নতুন কিছু শিখুন
- ইতিবাচক অভ্যাস করুন
- শিক্ষাতে মন দিন
- কনফিডেন্স বাড়িয়ে তুলুন।
এছাড়াও প্রয়োজনে আপনি নিজেকে সাজানোর জন্য পছন্দমত বিভিন্ন সামগ্রী যেমন- প্যান্ট শার্ট জুতা ঘড়ি ইত্যাদি পড়তে পারেন- যেগুলো স্মার্ট মানুষের অক্সিজেনযুক্ত হিমোগ্লোবিন যোগাবে।