ভাগ্যকে নিজেই গড়ে নিতে হয় । 2020 সালের সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মান্না ওমপ্রকাশ সিং রানার্স আপ হয়েছেন। রিকশাচালকের মেয়ে হয়ে মান্না প্রাচীন জীবনের কঠিন সময় পার করে এবং অভাব-অনটন কে পিছনে ফেলে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নিজের নাম লিখে নিয়েছেন। কোন একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে পারলে বাস্তবতা এবং ফলাফল নিজের অনুকূলে থাকে- বর্তমানে যার বাস্তব প্রমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মান্না ওমপ্রকাশ সিং।
জীবনের কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে মিস ইন্ডিয়া অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে সফলভাবে প্রমাণ করেছেন এবং তার অভিজ্ঞতা এবং কষ্টের স্মৃতিচারণা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। কোন কাজ করে তার ফল লাভের আশায় বসে থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু কোন কিছু না করে তার ফলাফল আশা করা যায় না। মিস ইন্ডিয়া একজন গরিব ঘরের মেয়ে হয়েও আজ বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
আমরা এখানে মিস ইন্ডিয়া অর্থাৎ মান্না ওমপ্রকাশ সিং এর আত্ম কথাগুলো এখানে শেয়ার করেছি।
মান্না ওমপ্রকাশ সিংয়ের আদি জীবন
মান্না ওমপ্রকাশ সিং নয়াদিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা একজন রিকশাচালক। পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে তিনি বেশিদূর এগোতে পারেননি। 14 বছর বয়সে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান এবং মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। উচ্চশিক্ষার আশা থাকলেও পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে তিনি উচ্চ শিক্ষায় পড়াশোনা করতে পারেননি। তিনি কল সেন্টারে কাজ করতেন এবং সামান্য কিছু অর্থ পেয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করতেন।
জীবনের সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি যখন পিজা শপে কাজ করতেন, তখন তিনি মিস ইন্ডিয়া যোগদান করে 80 শতাংশ পর্যন্ত সফল হয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে অর্থাৎ 2020 সালের মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় রানার্স আপ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
মিস ইন্ডিয়ার কষ্টের কাহিনী
আপনি জেনে অবাক হবেন যে, তিনি পিতা-মাতা এবং ছোট ভাই এর স্মৃতিচারণায় কেঁদেছিলেন। মিস ইন্ডিয়া হওয়ার গৌরব অর্জন করে, তিনি অভিজ্ঞতা আমাদেরকে শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন-
“আমি অনেক রাত অনাহারে এবং ঘুম না করে কাটিয়েছি। আমি অনেক দুপুরে কয়েক মাইল হেঁটেছি। আমার রক্ত, ঘাম এবং অশ্রু আমার স্বপ্নগুলি অনুসরণ করার সাহসে একত্রিত হয়েছে। রিকশাচালক কন্যা হওয়ার কারণে, আমার কৈশোরে কাজ শুরু করার কারণে আমি স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাইনি। আমার যে সমস্ত পোশাক ছিল তা হ্যান্ড-মি-ডাউন ছিল। আমি বইগুলির জন্য আকুল হয়েছি, তবে ভাগ্য আমার পক্ষে ছিল না। অবশেষে, আমার পিতামাতারা ডিগ্রি অর্জনের জন্য আমার পরীক্ষার ফি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমার মায়ের যত ছোট গহনা ছিল তা বন্ধক করে রেখেছিল”
মানুষের শত বাধা পেরিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন, তার জ্বলন্ত প্রমাণ মান্না অপপ্রকাশ সিং । জীবনের কষ্টের দিনগুলো পার করার মধ্য দিয়ে এবং মিস ইন্ডিয়া হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পেরে তিনি আরো বলেছেন-
“আমার মা আমাকে সরবরাহ করার জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছেন। 14 এ, আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি। আমি কোনওভাবে দিনের মধ্যে আমার পড়াশোনা শেষ করতে সক্ষম হয়েছি, সন্ধ্যায় ডিশ ওয়াশার হয়েছি এবং রাতে একটি কল সেন্টারে কাজ করেছি। আমি কয়েক ঘন্টা হেঁটেছি এমন জায়গায় পৌঁছাতে যাতে আমি রিকশার ভাড়া বাঁচাতে পারি। আমি আমার পিতা, আমার মা, এবং আমার ছোট ভাইকে উন্নত করতে এবং বিশ্বকে দেখানোর জন্য ভিএলসিসি ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ২০২০ এর মঞ্চে এসেছি এবং বিশ্বকে দেখানোর জন্য যে আপনি যদি নিজের এবং নিজের স্বপ্নের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন তবে সমস্ত কিছুই সম্ভব। ”
কর্মের মধ্যে সফলতা নিহিত। মানুষ নিজেই নিজের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক। সুতরাং ,আপনি আমি যাই করি না কেন, তা সবই হচ্ছে আমাদের দুই হাতের ইনকাম। কোন কিছুর প্রতি অধিক আগ্রহ এবং অধ্যায়ন মানুষকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দিতে পারে।