পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবের কারণে অনেকের চোখের নিচে কালো দাগ দেখা যায় যা বিরক্তিকর এবং কুৎসিত মনোভাব সৃষ্টি করে ।নারী এবং পুরুষের উভয়ের চোখের নিচে কালো দাগ পড়তে দেখা যায়। অধিক পরিমাণে মোবাইল, ল্যাপটপ এবং অনলাইনে পড়ে থাকার কারণে বেশিরভাগ মানুষের বিশেষ করে মেয়েদের চোখের নিচে কালো দাগ বেশি দেখা যায় ।এই চোখের কালো দাগ দূর করতে অনেকে নানাবিধ পর্থা অবলম্বন করে সফলতা পাননি ।আপনি চাইলে ঘরে বসেই চোখের নিচের কালো দাগ কত সহজেই দূর করতে পারবেন।
চোখের নিচে কালো দাগ হলে দেখতে যেমন খারাপ লাগে তেমনি বয়স বেশি মনে হয় । আপনি হয়তো রাত জেগে পড়াশোনা করেন অথবা অফিসের কাজকর্ম করেন অথবা প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে রাত জেগে চ্যাটিং এবং কথা হয়, সে যাই হোক না কে, কোনো কারণে যদি আপনার চোখের নিচের দাগ পড়ে যায় তব্ আপনি নিশ্চয়ই সে দাগ সারানোর উপায় অবলম্বন করবেন।
আমরা এখানে চোখের নিচে কালো দাগ ঘরোয়া উপায়ে দূর করার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি। যে কেউ চাইলে আমাদের আলোচনা থেকে চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার উপায় অবলম্বন করে মানসিক প্রশান্তি পেতে পারেন ।পর্যাপ্ত ঘুম ছাড়াও চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার অন্যান্য কারণও রয়েছে যা জানা আমাদের জন্য জরুরী ।ব্যস্ততা পূর্ণ মানুষের জীবনে ঘুমের একটু ঘাটতি হতেই পারে। যার ফলে নিজের সৌন্দর্য তো আর বিলীন করে দেওয়া যায় না ।
সুতরাং ঘুম কম হওয়া, মানসিক দুশ্চিন্তা হওয়া, বদ অভ্যাস থাকা, ইত্যাদি যেকোনো কারনেই চোখের নিচে কালো দাগ হোক না কেন, সহজলভ্য বস্তু সমন্বয় ঘরোয়া উপায়ে আপনি সহজেই তা মুছে ফেলতে পারবেন। কাজেই, কথা না বাড়িয়ে চোখের নিচে দাগ হওয়ার কারণ এবং তা দূর করার উপায় গুলো বিস্তারিত জেনে নেই।
চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয়?
স্বাভাবিক দৃষ্টিতে একজন সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন সর্বনিম্ন 8 ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন কিন্তু কোন কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ তার চেয়ে বেশি কম কম হলে বা রাত জেগে ল্যাপটপ কম্পিউটার বা মোবাইলে কাজ করলে অথবা রাত জেগে পড়াশোনা করলে চোখের নিচে কালো দাগ হতে দেখা যায। এছাড়া ধূমপান, মানসিক অস্থিরত, চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার অন্যতম উৎস চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার পরীক্ষিত কারণগুলি নিচে উল্লেখ করা হলো-
- সস্তা মেকআপ পণ্যের ব্যবহার- সস্তার মেকআপ পণ্যের ব্যবহার অথবা নাম ঠিকানাহীন প্রসাধনী ত্বকের ক্ষতি করে থাকে বিভিন্ন ধরনের নকল প্রসাধনী বাজারে কিনতে পাওয়া যায় ।টাকা বাঁচাতে গিয়ে অনেকে সস্তা খুঁজতে আরম্ভ করে ফলে সস্তা প্রসাধনী ব্যবহার করে চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে।
- জীবাণুযুক্ত পানি ব্যবহার করলে- পানিতে জীবাণু থাকলে তার শরীরের চামড়ার অনেক ক্ষতি করে থাকে এছাড়াও জীবাণুযুক্ত পানি পান করলে শরীরের অক্সিজেন যুক্ত হিমোগ্লোবিন তৈরিতে ব্যাহত হয়, ফলে দূষিত রক্ত গঠিত হওয়ার কারণে পিম্পলস বা ডার্ক সার্কেল গুলি দেখা দিতে পারে।
- ত্বকে রোদ পড়লে- অধিক মাথার ত্বকে পড়লে ত্বকের ক্ষতি হয় সেজন্য ত্বকের উজ্জ্বলতা রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ক্রিকেটার বা খেলোয়াড়রা মুখে প্রসাধনী মেখে খেলতে নামে ।রোদে ঘোরাঘুরি করলে তা থেকে ধীরে ধীরে চোখের নিচে কালো দাগ বা চেহারার উজ্জলতা নষ্ট হতে পারে।
- মানসিক দুশ্চিন্তা- মানসিক দুশ্চিন্তা শুধু পিম্পলস বা চোখের নিচে কালো দাগ তৈরি করে না, বরং বড় রোগের উৎস হিসেবে কাজ করে মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে ঘুম কম হয়, যার ফলে চোখের নিচে কালো দাগ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- অ্যালকোহল বা ধূমপান করা- অ্যালকোহল গ্রহণ করা বা ধূমপান করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর । যে সকল ঘুমের জন্য অ্যালকোহল গ্রহণ করে বরং সে তার উল্টোটা পায়, আর হয় না যার ফলে রক্তে অক্সিজেনের যোগান কমে যায় ফলে চোখের নিচে কালো দাগ সহ অন্যান্য রোগের বীজ বপন হয়।
- ঘুমের অভাব- একজন স্বাভাবিক মানুষের যে পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন তার চেয়ে কম ঘুম হলে তা থেকে চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে । পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে সকল ছেলে অথবা মেয়েরা মোবাইল ল্যাপটপ এবং কম্পিউটারে রাত জেগে সময় কাটানতাদের চোখের নিচে কালো দাগ বেশি পড়ে থাকে ।
হয়তো আপনি এখন জিজ্ঞেস করতে পারেন যে, তাহলে কি মোবাইল ল্যাপটপ বা কম্পিউটার চালানো বন্ধ করে দেব? না বন্ধুরা বিষয়টা এমনটি নয়, সব কিছুর একটা লিমিট থাকা বাঞ্ছনীয় । পরিকল্পনামাফিক 24 ঘণ্টার মধ্যে আপনি 8 ঘণ্টা ঘুমান, 8 ঘণ্টা পরিশ্রম করেন এবং 8 ঘণ্টা খাওয়া-দাওয়া গোসল এবং ঘুরাঘুরি করেন সবকিছু ঠিকঠাক মত থাকবে বলে আমরা ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি ।
যাই হোক, যে কোনো কারণে চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে থাকলে তা দূর করার সহজ উপায় যেহেতু আমাদের আছে তো টেনশন কিসের?
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
> টমেটো
টমেটোতে উচ্চশক্তিসম্পন্ন তিন প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন সি থাকে যার ফলে টমেটোর রস চোখের নিচে কালো দাগের উপরে কিছু সময় ধরে রাখলে এবং তা নিয়মিত করলে একসময় চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়ে যায়।
> ঠান্ডা দুধ
ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা দুধ থেকে অল্প পরিমাণে বাটিতে দুধ নিয়ে কালো দাগের উপরে রাখুন এবং 5 থেকে 10 মিনিট পরে স্বাভাবিক জল দিয়ে নিয়মিত ধৌত করার ফলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়।
> অ্যালোভেরা
আপনি যদি চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে চান, তবে বাজার থেকে অ্যালোভেরা কিনে এনে চোখের কালো দাগের উপরে একটি নির্দিষ্ট সময় রাখলে এবং তা নিয়মিত করলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়ে যায় ।
অ্যালোভেরায় সালিসাইলিক এসিড, অ্যামাইনো এসিড এবং বিভিন্ন এনজাইম থাকে ফলে চোখের নিচে কালো দাগ এর ওপর ঘষলে কালো দাগ দূর হয়ে যায়।
> বাদাম তেল
বাদামের তেল চোখের নিচে কালো দাগের উপরে ঘুমানোর আগে নিয়মিত দিলে মাদামে অবস্থানরত ভিটামিন-ই কালো দাগ দূর করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
> কমলার খোসা, লেবুর রস এবং শসা
কমলার খোসা লেবুর রস এবং শসা চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার সবচেয়ে সহজ এবং গুরুত্বপূর্ণ উপায়। প্রতি রাতে শোয়ার আগে কমলার খোসার লেবুর রস অথবা শসা শসা কেটে নিয়ে চোখের নিচে কালো দাগের ওপর রাখলে কালো দাগ দূর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। এজন্য বিউটি পার্লারে চোখের মধ্যে কাটা শসা দিতে দেখা যায় ।
লেবুতে প্রচুর সাইট্রিক এসিড রয়েছে- ফলে যখন চোখের নিচে কালো দাগের ওপরে লেবুর রস নিয়মিত দেয়া হয় তখন কালো দাগ দূর হয়ে যায়।
> কাঁচা আলু
কাঁচা আলুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ভিটামিন বি সিক্স পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে যা সহজেই চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে ফেলে ।